একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর গণ্ডি পেরিয়েই তোমরা এক বিশাল যুদ্ধের সম্মুখীন হবে। সেই যুদ্ধটি হল ভার্সিটি এডমিশন যুদ্ধ। পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য একটি আসনের পেছনে যুদ্ধ করে অনেক শিক্ষার্থী। কিন্ত কেন ? ভালো ইউনিভার্সিটিতে একটি ভালো সাবজেক্টে পড়ার সুযোগ তোমার ক্যারিয়ার ও চিন্তা ভাবনা অনেকটাই বদলে দিবে।
একটি ইট কখনো দূর থেকে চোখে পড়েনা, একটি একটি করে জোড়া লাগিয়ে বিল্ডিং বানালেই কেবল দূর থেকে সবার চোখে পড়ে মানুষের সফলতা হল একটি বিল্ডিং যা আস্তে আস্তে বানানোর পরই চোখে পড়ে । একাদশ দ্বাদশ শ্রেনীর দুই বছর কতটা তুমি ইফোর্ট দিয়ে পড়াশোনা করেছো তার উপর নির্ভর করবে তোমার এডমিশন যুদ্ধে জয়ী হওয়া না হওয়া। টোটাল ২০০ মার্কসের মান বন্টন। তার মধ্যে ১০০ মার্কস তোমার SSC ও HSC জিপিএ থেকে কাউন্ট করা হবে। ৪০% তোমার SSC ও ৬০% HSC রেজাল্ট থেকে নেয়া হবে।
আর বাকি ১০০ মার্কসের পরীক্ষা হবে তোমার HSC সিলেবাস থেকে। তাই সময় নষ্ট না করে তোমার প্রতিটি দিন কাজে লাগাও। আরাম আয়েশ আর অর্জন কখনোই এক পথে চলে না। অলসতা কখনো সফলতার বন্ধু হতে পারে না। সফলতার চারা গাছ দেখতে হলে অবশ্যই তোমাকে চেষ্টার বীজ বুনতে হবে। মনে রেখো ট্যালেন্ট বা যোগ্যতা দিয়ে বিচার করা হয় না, বিচার করা হয় অর্জন দিয়ে। কারন অর্জনই গর্জন। মাথা উঁচু করে বাঁচতে হলে তোমাকে অর্জনের প্রসেসে ঢুকতে হবে। সাকসেস হতে হলে চেষ্টা না করে মোবাইল নামক ঢিলামির বাক্সে বন্দী থাকা যাবে না। জীবনে সাকসেস হওয়ার কোনো লিফট নেই, দুনিয়াতে কেউ শর্টকাটে সফল হতে পারে না। নিজের উপর জোর করে হলেও প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন কমপ্লিট করতে হবে। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেনীর ২ বছরের ক্যালেন্ডারের পাতা শেষ হয়ে গেলে পাওয়া না পাওয়ার হিসেব চূড়ান্ত হয়ে যাবে। এই দুই বছর বেশি উপভোগ করতে গিয়ে বেশি অনুশোচনায় ভুগতে যেনো না হয় সেই দিকটাও লক্ষ্য রাখতে হবে।
আজ না কাল পড়তে বসবো, আমার তো ভালো করে পড়া উচিৎ এই একই চিন্তা সবার মনেই আসে, পাথর্ক্য শুধু ঝাপিয়ে পড়ার মাঝে। বেশির ভাগ মানুষ সফল হতে পারে না কারন তারা যাত্রাই শুরু করে না। তাই তোমাদের বলি, দেরি না করে পড়তে বসো, প্রতিটা মূহুর্ত কাজে লাগাও।
সময় নষ্টকারী অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করতে হবে, সময় নষ্ট করার অপশন যত বাড়বে প্রোকাস্টিনেশনও তত বড়বে। হাতের মোবাইলটি ৩ ঘন্টা দূরে রেখে পড়তে বসলে কোনো ক্ষতি হবে না। কয়েক ঘন্টা তোমার হাতে মোবাইল না থাকলে দুনিয়া পাল্টে যাবে না। পড়াশোনার চেয়ে তোমার মোবাইল জরুরি না। মনে রেখ মোবাইল এখন আমাদের অজান্তেই এক মহা আসক্তিতে পরিনত হয়েছে। মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই তুমি তোমার লক্ষ্যের পেছনে ক্লান্তিহীনভাবে লেগে থাকতে পারবে।
তোমরা কি জানো গুগলের বর্তমান CEO কে ??
তিনি হলেন- সুন্দর পিচাই
তিনি ভারতের তামিলনাড়ুর এক মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠেন। দুই রুমের একটি এপার্টমেন্টে ছোট ভাই সহ চার জনের পরিবার বাস করত। একটি ল্যাপটপ এমনকি একটি মোবাইল কেনার সামর্থ ছিলনা।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবৃত্তিতে সুযোগ পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে যাবার জন্য প্লেনের টিকিট কেনার সামর্থ্যও পরিবারের ছিল না। পরিবারের সঞ্চিত অর্থ আর এক বছরের মোট আয়ের চেয়েও বেশি পরিমান অর্থ লোন নিয়ে সেই ব্যবস্থা করেন তার বাবা-মা।
তার বর্তমান বেতন ভারতীয় মুদ্রায় ১৮৮৪ কোটি ৩৯ লাখ ১৩ হাজার ৯০০ টাকা। কঠোর পরিশ্রম করলে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।
যার প্রয়োজনের আকাঙ্খা যত বেশি তার আলসেমি আর এক্সকিউজ ততই কম।নদীর স্রোত কাউকে পাহাড়ের চূড়ায় উঠায় না বরং সাগরে নিয়ে ভাসায়। সাকসেস হতে হলে নিজেকে কন্ট্রোল করতে হবে। আনন্দ আর ইফোর্টের মধ্যে ব্যালেন্স রেখে পড়াশোনা করতে হবে।
মনে রেখো; মেধাবীরা হেরে যেতে পারে কিন্তু পরিশ্রমীরা কখনোই হারে না। সঠিক পথে পরিশ্রম করো, সফলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ।